ভাগ – সাদাত হাসান মান্টো

তর্জমা: সামসুদ্দোজা সাজেন

সবচেয়ে বড় সিন্দুকটাই সে বাছাই করেছিল। কিন্তু অনেক চেষ্টা করেও কাঠের সিন্দুকটা নাড়াতে পারল না। আরেকজন অনেক খোঁজাখুজির পর মূল্যবান কিছু না পেয়ে প্রথম ব্যক্তির নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার কোন সাহায্য লাগবে?’

প্রথম ব্যক্তি মাথা নেড়ে সম্মতি জানালে সাহায্যকারী লোকটি পেশীবহুল হাত দিয়ে ভয়ংকর ভারি সিন্দুকটি চওড়া কাঁধে তুলে নিল। রাস্তায় উঠতে উঠতেই বহনকারীর মনে হল সিন্দুকের ভারে  তার কোমর নইলে পা দুটো ভেঙ্গে যাবে। তারপরও ভাগের আশায় সে বয়ে নিয়ে চলল।

সিন্দুক দখল করা লোকটি গায়ে গতরে তেমন বলশালি ছিল না। তারপরও মালিকানা জাহিরের জন্য সে শক্ত করে একটি অংশ আঁকড়ে থাকল। তারা ধীরে ধীরে একটি নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে চলল।

নিরাপদ জায়গায় পৌঁছে বহনকারী সিন্দুক নামিয়ে রাখল। কঠোর শ্রম স্বীকারকারী লোকটি এবার জানতে চাইল, ‘আমার ভাগ কতটুকু?’

‘চার আনা,’ জবাব এল।

‘ন্যায্য হল না!’

‘না? মনে রেখ আমিই পেয়েছিলেম সিন্দুকটা।’

‘সেটা ঠিক, কিন্তু আমিই তো পিঠে করে এতটা পথ বয়ে নিয়ে এলাম।’

‘আচ্ছা, অর্ধেক অর্ধেক।’

‘এই বার হল। চল দেখি ভিতরে কি আছে।’

সিন্দুক খুলতেই তরবারি হাতে এক লোক বেরিয়ে এল, তরবারির ঘায়ে দুই অংশীদারকে চার টুকরা করে ফেলল।

মন্তব্য করুন