Tag Archives: আল আসাদুল করিম

শাহবাগে কেন যাই – আল আসাদুল করিম

শুনে খুব উত্তেজিত হলাম যে যুদ্ধাপরাধের লোক দেখানো বিচারের প্রতিবাদে একদল তরুণ ব্লগার জাতীয় জাদুঘরের সামনে জড় হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছে। কিন্তু প্রথমদিকে টিভিতে আওয়ামীপন্থী কিছু সাংস্কৃতিক কর্মীকে যেভাবে বক্তব্য দিতে দেখলাম তাতে মনে হয় তারাই যেন এই প্রতিবাদ কর্মসূচির হোতা। ভুল ভাঙতে দুইদিন সময় লাগল — যখন সশরীরে উপস্থিত হলাম। মনে দুঃখ নেই কারণ যেখানে ‘গণতন্ত্রের মানসকন্যা’, আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ছয়দিন লেগেছে এই আন্দোলন সম্পর্কে একটা বক্তব্য দিতে। ড. কামাল হোসেন, ড. আকবর আলি খান বা ড. মুহম্মদ ইউনুস সম্পর্কে বলার জন্য তার অবশ্য ১২ ঘণ্টাও লাগেনি। আর বর্তমান প্রধান বিরোধীদলীয় নেতার তো কথাই নেই। মাঝে মাঝে ভাবি কি এমন মধু আছে জামাতের ভাণ্ডারে যে তারা জামাতকে ছাড়তেই পারে না? এমনকি নিজেদের অস্তিত্ব বিসর্জন দিয়েও তাদের জামাতের তল্পি কেনই বা বহন করে যেতে হয়? মাঝে মাঝে ভাবি, এটা কি কোন রাজনৈতিক দল নাকি শুধুমাত্র কিছু সুবিধাভোগী লোকের আড্ডাস্থল? আর তাদের ভারোত্তলনকারীর কথা শুনলে খিস্তিবাজদের মত কিছু খিস্তি ঝেরে বলতে ইচ্ছা হয়, ‘দ্যাশটা তো আপনের বাপের রাজত্ব আর আমরা আইছি এইহানে আপনেরে মসনদে বসাইবার লেগা! ভোদাই পাইছেন আমগো, আপনেগো লোকরা যেই স্কটল্যান্ডের পানি গিলা খায় ২০০৭ সালে দেখছি যায়া দোস্তের লগে হেগিলি খান আর আমেেগা বাংলা লইয়া পইরা থাকবার কন!’
তোফায়েল ভাই, সংহতিই যদি জানাইবার আইছেন, তয় পাণ্ডা লগে কইরা আনোনের দরকার কি? নাকি ডরাইছেন, আগের হ্যারা তো বোতল খাইছেন, আপনি আরো ভারি কিছু খাইতে পারেন! এত ডর থাকলে আহনের কাম কি?
লাকি আপা, ছোটবেলা থেকে পড়াশুনার পাশাপাশি আরেকটা কথা শিখেছি, ‘স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন।’ নতুন করে বলার কিছু নেই। মোটামুটিভাবে আমরা সবাই জানি ১৯৮৪, ১৯৮৬ সালে স্বৈরাচারীর সাথে, ১৯৯০, ১৯৯৬ সালে রাজাকারদের সাথে এবং ২০০৮ সালে সেনাবাহিনী সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাথে এই সরকারের ভূমিকা কি ছিল। সেই ধারাবাহিকতায়, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ২০১২ সালেও যে এইসব রাজাকারের সাথে তাদের আতাত হয়নি তা বিশ্বাস করা খুবই কঠিন। তাই আপনাদেরকে বলছি, এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষের যে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ তাতে গুরুত্ব দিন।
গতকাল আমি একজন ড্রাইভারকে বলতে শুনেছি, ‘এ্যারা নিশ্চয় অনেক বড় কোন পাপ করছে নাইলে এত মানুষ এ্যাগো ফাঁসি চায় ক্যা?’ তাই বলছি, আমাদের এই আন্দোলনের চালক যদি এই দুই দলের কারও হাতে চলে যায় তার মানে হবে আমরা যাদের ফাঁসি চাইছি তাদের হাতেই আন্দোলন চলে যাওয়া। কয়েক দিনেই সাধারণ জনগণ আপনাকে এই সময়ের অগ্নিকন্যা বানিয়েছেন, তাই দয়া করে অন্যান্যদের নিয়ে খেয়াল রাখবেন আমাদের এই আন্দোলন যেন কোন ক্ষমতালোভী আর ক্ষমতার সুবিধাভোগীদের হাতে না চলে যায়।